আব্দুল্লাহ উপন্যাসের বিষয়বস্তু।


আবদুল্লাহ উপন্যাসের সামাজিক গুরুত্ব।আবদুল্লাহ উপন্যাসের সমালোচনা।


বিশ শতকের তৃতীয় দশকে কাজী ইমদাদুল হকের 'আব্দুল্লাহ্' উপন্যাসটি মুসলিম জাতিসত্তার সামগ্রিক জীবনের শাশ্বত সমাজচিত্র হিসেবে ভাস্বর হয়ে উঠেছে। মুসলিম সাহিত্যিকদের মধ্যে ইমদাদুল হক হচ্ছেন সেই শিল্পী যিনি শিল্প উপাদান সংগ্রহে প্রথম মনোযোগী হলেন সমকালের প্রতি। তিনি ছিলেন সংস্কারমুক্ত, উদার মানবতাবাদী মননশীল এবং যুক্তিবাদী শিল্পদৃষ্টিসম্পন্ন ঔপন্যাসিক।


আবদুল্লাহ উপন্যাসে নারীর জীবন বাস্তবতা।

উনিশ শতকের প্রারম্ভেই কলকাতা কেন্দ্রীক হিন্দু মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ ঘটলেও নানা সামাজিক -রাজনৈতিক -অর্থনৈতিক কারণে শত বছর পেরিয়ে বিশ শতকে জন্ম নেয় ঢাকা কেন্দ্রীক নব জাগ্রত মুসলিম মধ্যবিত্ত শ্রেণি।কুসংস্কারাচ্ছন্ন প্রথালালিত সামন্ত মূল্যবোধে স্নিগ্ধ, মুসলিম সমাজ অঙ্গনে বাসন্তী হাওয়ার প্রত্যাশায় কাজী ইমদাদুল হক দ্রোহীসত্তা নিয়ে সাহিত্যাঙ্গনে আবির্ভূত হয়েছিলেন।




১৯৩৩ সালে 'মোসলেম ভারত' পত্রিকায় প্রকাশিত 'আব্দুল্লাহ্' উপন্যাসটি কালের পরিক্রমায় এমন একটি সময়ে লেখা যে সময়টি মুসলিম বাঙালি জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঔপনিবেশিক যুগের শেষ সময়ে এসে নতুন সভ্যতা ও শিক্ষার প্রভাবে আমাদের এই জনপদের কি পরিমাণ পরিবর্তন হয়েছিল সেগুলো এবং পূর্বাপর সংস্কারগুলোর স্বরূপ নির্ণয় করতে পারি। ঐ সময়ে হিন্দু সমাজ যতটা এগিয়ে ছিলো মুসলিম সমাজ ততটা পিছিয়ে ছিলো।এই সময়ে আলিগড়ের বিখ্যাত মুসলিম পুরোধা স্যার সৈয়দ আহমদের আবির্ভাব হয়।


তিনি মুসলিম বাঙালি জাতিকে এগিয়ে নিতে ও দুর্গতি থেকে রক্ষা করার অভিপ্রায়ে ইংরেজি শিক্ষার ওপর জোর দেন।কারণ ইংরেজি না শিখে আধুনিক শিক্ষার প্রসাদ থেকে মুসলমান সমাজ ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছিল। ফলশ্রুতিতে বাঙালি হিন্দু ও মুসলিম সমাজের অসম গতিবেগের স্পষ্ট ছাপ উপন্যাসেও বিধৃত হয়েছে। বাঙালি মুসলিম সমাজের নানা প্রেক্ষাপট, সংকট, সমস্যা চিহ্নিত করে অনুপুঙ্খভাবে বিচার-বিশ্লেষণ  করেছেন ঔপন্যাসিক তাঁর 'আব্দুল্লাহ' উপন্যাসে।


এ উপন্যাসে চিত্রিত হয়েছে গ্রামীণ মুসলিম সমাজের পীরভক্তি,ধর্মীয় কুসংস্কার, পর্দাপ্রথা, আশরাফ -আতরাফ  সমস্যা, হীন স্বার্থপরতা, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ইত্যাদির বিরুদ্ধে বুর্জোয়া মানবতাবাদী প্রতিবাদ। উপন্যাসের শুরতেই জাত্যাভিমানের সংকট পরিলক্ষিত হয়।আব্দুল্লাহ ও সালেহার বিবাহে নারাজ ছিলেন সালেহার পিতা আবদুল কুদ্দুস। কারণ তিনি সৈয়দ তথা উচ্চ বংশের লোক।মুসলিম সমাজের উচ্চ বংশের লোকদের বলা হতো আশরাফ ও নিচু বংশের লোকদের বলা হতো আতরাফ।


আশরাফ - আতরাফ সমস্যাটি এ উপন্যাসে চরম আকার ধারণ করেছে। ছাত্রদের ধর্মীয় সবক দেওয়া ও ঘরোয়া খাবার পরিবেশনের মধ্যে এ প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে। আতরাফ বলে সবক দেওয়া নিষেধ, আবার একেবারে নিরাশ করলেও খোদার কাছে জবাব দিতে হবে এমন প্রতারণামূলক বক্তব্য পরিলক্ষিত হয়।মৌলবি সাহেবের বক্তব্য এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য -


'এক্কেকালে নৈরাশ করলে খোদার কাছে কি জবাব দিমু'।


 মসজিদ উদ্বোধনকালে শরীফাবাদের অতিথি ও আবদুল খালেকদের পরিবারের মধ্যে খাবার পরিবেশন প্রসঙ্গও দৃষ্টিগ্রাহ্য।

বাংলাদেশে শত শত বছর ধরে জেঁকে বসা পীর প্রথার এক বাস্তবিক চিত্র এ উপন্যাসের প্রাসঙ্গিক বিষয়। উপন্যাসের নাম চরিত্র আবদুল্লাহ'র পিতা ওলিউল্লাহ ছিলেন পীর এবং তাঁর বৃত্তি ছিলো খোন্দকারী।বাংলার আপামর প্রান্তিক জনগণ ছিলেন পরম পীরভক্ত।আব্দুল্লাহ'র পিতার মুরীদ কাসেম গোলদারের বাড়িতে আবদুল্লাহ'র আশ্রয় নেওয়া,তাঁর সেবা-যত্ন করার মধ্য দিয়ে এ পীর পরিবারের প্রতি পীরভক্তি প্রকাশ পেয়েছে।


কিন্তু কুসংস্কারাচ্ছন্ন এ প্রথায় ভক্তি দিতে যেয়ে মুরীদ যে সংকট ও দৈন্যের কবলে পতিত হয় তার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম চিত্রও ঔপন্যাসিক উপস্থাপন করেছেন।তৎকালীন সমাজব্যবস্থার আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো বাঁদীকে বিয়ে করা এবং বাঁদীর গর্ভজাত সন্তানকে পূর্ণ সন্তানের মর্যাদা না দেওয়া।খোদা নেওয়াজ সৈয়দ কুদ্দুস সাহেবের জ্যেষ্ঠ পুত্র হলেও বাঁদী পুত্র বলে সেও জ্যেষ্ঠ পুত্র বলে অভিহিত হয় নি।অথচ খোদা নেওয়াজই দুর্দশা মুহূর্তে শেষ পর্যন্ত ভিটেমাটি ত্যাগ করে নি।


মুসলমানদের সমস্যা সম্বন্ধে লেখক দুর্লক্ষ্য নয় এ উপন্যাসে।হিন্দু -মুসলমানের মধ্যে কার অপরাধ অপরাধ কতখানি এ বিচারে গ্রন্থাকারের রুচি নেই। কিন্তু তাদের সম্পর্কের ক্লেদ অশেষ দক্ষতার সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন।বিশ শতকের গোড়ায় মুসলমানগন নিজ সমাজের দুর্গতি এবং  তাদের উন্নতির জন্য বিশেষ রূপে সচেষ্ট হয়ে উঠেন।আত্মপ্রতিষ্ঠার প্রবল তাগিদে শিক্ষিত মুসলমানগণ আত্মোপলব্ধি লাভ করে।বঙ্গভঙ্গ রদ হলে বাঙালি মুসলমানগণ ইংরেজ শাসকের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে এবং প্রতিবেশী হিন্দুর সঙ্গে মিলনের প্রত্যাশী হয়।তৎকালীন সমাজচিত্র উপন্যাসে বিধৃত করে ঔপন্যাসিক তাঁর সম্প্রীতির রাখিবন্ধনে যেভাবে যুক্ত হলেন তার প্রমাণ উপন্যাসের নিম্নোক্ত অংশ -


'আশীর্বাদ করি,তোমরা মানুষ হও,প্রকৃত মানুষ হও- যে মানুষ হলে পরস্পর পরস্পরকে ঘৃণা কত্তে ভুলে যায়,হিন্দু মুসলমানকে মুসলমান হিন্দুকে আপনার জন বলে মনে কত্তে পারে '।


হিন্দু মুসলিমের মিলনাকাঙ্ক্ষী লেখক সমাজ থেকে নানা চরিত্রের মধ্যে দিয়ে এর সার্থক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দেবনাথ ডাক্তারের অসাম্প্রদায়িক কাণ্ডজ্ঞান ও মনুষ্যত্ববোধ সেকালের হিন্দু মুসলমান সমাজের পক্ষে আশীর্বাদস্বরূপ।শিক্ষিত সংস্কারমুক্ত উদারমনা এই মানুষটি সম্প্রীতির বাঁধুনিকে আরো দৃঢ় করে-


ডাক্তার বাবু কহিলেন,'না,না ওসব আর কি!  আমি ত এখানে ডাক্তার বলে আসিনে।বন্ধুভাবেই এসেছি। আর আপনারা তো ধরতে গেলে হস্পিটলেই আছেন- আমার বাড়িতে জায়গা ছিল, তাই ওয়ার্ডে না রেখে এখানে রেখেছি'।তাছাড়া সম্প্রীতির পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতার বিষও যে বিষম হয়ে উঠতে পারে আজকালকার পাঠকদের সে কথা বলার প্রয়োজন পড়ে না।ব্রাহ্মণ ও আব্দুল্লাহর চোখাচোখি সে ইঙ্গিত দেয়।


মীর সাহেবের সুদ খাওয়া ও সুদ নেওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব ও নানা প্রশ্নের ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। ধর্মীয় দৃষ্টিতে সুদ আদান-প্রদান নিষিদ্ধ। আবদুল্লাহর পিত্রালয় ও শ্বশুরালয়ের সবাই গোড়া ধার্মিক। মীর সাহেবের সুদের টাকায় আবদুল্লাহকে পড়তে না দেওয়া, সুদের প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ সন্তানহীনতা,মানুষ কর্তৃক নিন্দা প্রভৃতি সামাজিক চিত্র আমরা দেখতে পাই।কিন্তু একই সাথে মীর সাহেবের সুদ ব্যাপারটি যে সামাজিক দৃষ্টিতে ইতিবাচক সে বিষয়ে ঔপন্যাসিক আলোকপাত করেছেন।পলাশ ডাঙ্গার মদনগাজীর পরিবারকে রক্ষা করা, রসুলপুরের মানুষদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করা, বাদশাহ মিয়ার ছেলেসহ অন্যান্যদের পড়াশুনার খরচ চালানো প্রভৃতি ইতিবাচক প্রেক্ষাপট দেখা যায়।ঔপন্যাসিক  আবদুল খালেক চরিত্রের বুলিতে আমাদের জানান দিচ্ছেন -


'আর সুদ নিয়ে ওঁর যে গোনাহ হচ্ছে তার ঢের সওয়াব হচ্ছে পরের উপকার করে'.।


পুঁজি অর্থনীতি ব্যবস্থায় সুদ প্রথার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার অভীষ্ট গুরুত্ব পেয়েছে এ উপন্যাসে।মুসলিম অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবনের সবচেয়ে বড়ো কুসংস্কার হচ্ছে ইংরেজি শিক্ষা থেকে বিরত থাকা। এক্ষেত্রে মুসলিম জীবনের ইতিহাস ও উপন্যাসের কাহিনি ধারার সাযুজ্য পাওয়া যায়।ধর্মীয় গোঁড়ামির অধিকারী কুদ্দুস সাহেবের মতে ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নাজায়েজ। কনিষ্ঠ পুত্র আবদুল কাদের ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করায় পিতা অসন্তুষ্ট;আব্দুল্লাহর পড়ালেখার খরচও একই কারণে দিতে রাজি নন।


অথচ ভোলানাথ বাবুর কথায় আটশ টাকার জরিমানা মওকুফ করা -মুসলিম সমাজের অভ্যন্তরীণ সংকটকে তুলে ধরে।ফলত অফিস আদালতে, ব্যবসা-বাণিজ্যে সব জায়গায় সকল দেশীয় লোকের মধ্যে কেবলই হিন্দু, মুসলমানের সংখ্যা নাই বললেই চলে। আবদুল্লাহ ও আবদুল কাদেরের মতো নতুন প্রজন্মের ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণে পশ্চাৎপদ মুসলিম বাঙালি সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আভাস পাওয়া যায়। আবদুল কাদেরের চাকুরী প্রসঙ্গের চুম্বকাংশ উল্লেখযোগ্য-


'আজ কাল -একজন করে লেখা পড়া শিখতে আরম্ভ করেছে, স্যার,এই তে একজন আপনার কাছে হাজির করেছি'।


মুসলিম সমাজের জাগরণে ইংরেজ প্রতিনিধি বর্গের ভূমিকা ছিলো আশাব্যঞ্জক।এ উপন্যাসেও চাকুরি ক্ষেত্রে মুসলমানদের নিয়োগের মাধ্যমে লেখক বিষয়টি পাঠকের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। আবার উপন্যাসটি যেহেতু মুসলিম জীবনের এক সামগ্রিক রূপায়ণ সেহেতু মুসলিমদের নিয়ে একটি বড়ো প্রশ্ন থেকে যায়  তা হলো মুসলমানরা কি বাঙালি?  শশী বাবুর বাসা ভাড়া প্রসঙ্গে এই ধরনের সংকটের সম্মুখীন আমরা হই-


' বাঙালি বললে আপনারা বাঙালি হিন্দুকেই বোঝেন'


এথেকে স্পষ্ট ফুটে উঠে যে বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলতে কি হিন্দুত্ববাদকে বোঝায় এবং ভদ্র লোক বলে নিজেদের অভিহিত করার মাধ্যমে মুসলিম ও হিন্দু সমাজের ফাঁরাক বা otherness ভাব স্পষ্ট হয়ে উঠে।


এই উপন্যাসে শিল্পধর্মের চেয়ে সমাজের গলদের দিকেই ঔপন্যাসিক নজর রেখেছেন বেশী, এই কারণে উপন্যাসের আরো দুটি অপরিহার্য অংশ কাহিনি ও চরিত্রায়নের দিক দিয়ে উপন্যাসটি হয়েছে দরিদ্র। সমগ্র উপন্যাসের মধ্য হালিমার চিকিৎসা উপলক্ষে উদ্ভূদ পরিস্থিতিই একমাত্র ঘটনা যেখানে কাহিনি জমে উঠেছে, নইলে এমন আর একটিও পরিস্থিতির সাক্ষাৎ কোথাও মেলে না যা শিল্পসার্থকতার উৎকর্ষ সাধনে নিয়ামক। উপন্যাসের কাহিনি সরল-নিটোল যেখানে দ্বন্দ্বের কোন সুযোগ হয়ে উঠে না।সংঘাত সৃষ্টিরও উপলক্ষ ছিল প্রচুর যেমন হালিমার চিকিৎসাকে কেন্দ্র করে দেখা গিয়েছিল,কিন্তু সংঘাতও এমন তীব্র হয়ে কোথাও বাঁধে নি যা উপন্যাসকে শিল্পসম্মত করতে পারতো।ফলে এটি প্যারীচাঁদ মিত্রের 'আলালের ঘরে দুলাল 'উপন্যাসের মতো নিরলস কাহিনি প্রাপ্ত হয়েছে। 


  • আব্দুল্লাহ,সৈয়দ সাহেব, মীর সাহেব এই তিন প্রধান চরিত্রের মধ্যে প্রধানতম কে এ নিয়ে তর্ক চলতে পারে। আব্দুল্লাহকে সহজেই গ্রন্থের প্রধান ব্যক্তি বলা যেতে পারে, কেননা গ্রন্থের সর্বত্র আমরা তাঁর সাক্ষাৎ পাই।আর বহু বিরুদ্ধতা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত তিনি জয়ী হতে পেরেছেন। তাঁর চরিত্রে তেজের চাইতে বুদ্ধি ও ভব্যতার অংশ বেশি। রক্ষণশীল সৈয়দ সাহেবের প্রকাণ্ড ব্যক্তিত্ব, তাঁর চারপাশের জগতের ওপর তাঁর প্রভাব আর সমাজে অপ্রিয়  কিন্ত তীক্ষ্ম ও বিচক্ষণ মীর সাহেবের অনাড়ম্বর কিন্তু সুনিশ্চিত সংস্কার প্রয়াস পরিলক্ষিত হয়।পুরুষ চরিত্রের পাশাপাশি নারী চরিত্র অঙ্কনে  তৎকালীন সমাজে নারীর ব্যক্তিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে সংকীর্ণতা দৃষ্টিগ্রাহ্য হয়েছে। আবদুল্লাহর মাতা, হালিমা  ও রাবেয়ার অন্তরের যে মাধুর্যটুকুর সঙ্গে তিনি আমাদের পরিচিত করিয়েছেন তা মনোরম। এই মুসলিম অন্তঃপুরিকাদের দিকে তাকালে ভালো করে বোঝা যায়, বাংলার হিন্দু ও মুসলমান যতই বিভিন্ন হোক বাস্তবিকপক্ষে তাদের বিভিন্নতা নগণ্য।


ই উপন্যাসের ভাষা সম্পর্কে বলতে হয় মুসলিম বাঙালিরা সদাসর্বদা যেসব শব্দ ব্যবহার করেন অথচ হিন্দু বাঙালিরা করেন না- বাংলা সাহিত্যে সেসবের প্রয়োগ কি ধরনের হবে এ নিয়ে বেশ ছোটখাটো সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে যা আধুনিক শিক্ষিত হিন্দু মুসলিমের দূরদৃষ্টি ও কাণ্ডজ্ঞানের পরিচায়ক।লেখক বিভিন্ন আরবি শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে মুসলিম সংস্কৃতিকে বাঙালিয়ানায় রূপান্তর করতে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।


সর্বোপরি এই উপন্যাসে শিল্প সার্থকতা নিরূপণে লেখক ততটা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেন নি যততটা সমাজ বাস্তবতার ক্ষেত্রে দেখিয়েছেন।লেখকের জীবনাবেগ ও হৃদয়াবেগের মূল বেদীতে রয়েছে সমাজবীক্ষণ।তাই 'আব্দুল্লাহ' উপন্যাস  যতটা না শিল্প, তার চেয়ে বড় কথা এ হচ্ছে সমাজচিত্র, খালি চোখে দেখা পুঙ্খানুপুঙ্খ সমাজ বাস্তবতা। 


আব্দুল্লাহ উপন্যাসের সমাজ চিত্র।আব্দুল্লাহ উপন্যাসের সমাজ বাস্তবতা।আব্দুল্লাহ উপন্যাসের রাবেয়া চরিত্র।আব্দুল্লাহ উপন্যাসের রচয়িতা কে।আব্দুল্লাহ উপন্যাসের উপজীব্য।আব্দুল্লাহ উপন্যাসের কাহিনী।আব্দুল্লাহ উপন্যাসের লেখক কে।আব্দুল্লাহ উপন্যাসের বিষয়বস্তু।আব্দুল্লাহ উপন্যাসের চরিত্র।আব্দুল্লাহ উপন্যাস।আবদুল্লাহ উপন্যাসের সামাজিক গুরুত্ব।আবদুল্লাহ উপন্যাসের সমালোচনা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ